বিয়ের সময় দেয়া হয়েছিল ৪৫ হাজার টাকা। পরে মোবাইল ফোনও কিনে দেয়া হয়। তবে বিয়ের ৬ মাস না যেতেই ফের চাওয়া হয় আরও ২০ হাজার টাকা। সঙ্গে ঘরের আসবাবপত্র!
রিকশাচালক বাবা মেয়ের শ্বশুরবাড়ির সেই আবদার মেটাতে পারবে না জানানো হলে গৃহবধূর ওপর চলে নির্যাতন। হাত-পা বেঁধে মারধরের পাশাপাশি ফেলে দেয়া হয় পুকুরে। পানিতে মরিচের গুঁড়া মিশিয়ে শরীরে ঢেলে দেয়া হয়। পানি চাইলে দেয়া হয় মরিচের গুঁড়ামিশ্রিত পানি!
নেত্রকোনা সদর উপজেলার ঝগড়াকান্দা গ্রামে ঘটেছে এমন নির্যাতনের অমানবিক ও মর্মান্তিক ঘটনা।
এ ঘটনায় স্বামী ঝগড়াকান্দা গ্রামের রাজন মিয়া ওরফে রফিককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। নির্যাতন শেষে গত শুক্রবার স্ত্রী শিউলি আক্তারকে ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার চরশিহারি গ্রামে বাবার বাড়ির সামনে রেখে পালানোর সময় তাকে আটক করেন স্থানীয়রা। পরে তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়া হয়।
স্থানীয়রা জানান, চরশিহারি গ্রামের রিকশাচালক সাইদুল ইসলামের মেয়ে শিউলির সঙ্গে ৮ মাস আগে ঝগড়াকান্দা গ্রামের রাজমিস্ত্রি রফিকের বিয়ে হয়। ওই সময়ই তাকে ৪৫ হাজার টাকা যৌতুক দেয়া হয়। পরে স্মার্টফোন কিনতে আরও ৮ হাজার টাকা নেন রফিক। প্রায় দুই মাস আগে ফের ২০ হাজার টাকা এবং খাটসহ ঘরের আসবাবপত্র ও রান্নার সামগ্রী চাওয়া হয়।
রিকশাচালক বাবা এগুলো দিতে পারবে না জানানোর পরই শুরু হয় নির্যাতন। গত শুক্রবার স্বামী, শাশুড়ি জরিনা আক্তার ও তার মেয়ে রুমা আক্তার হাত-পা বেঁধে শিউলিকে নির্যাতন শুরু করে। সেই নির্যাতনের ভিডিও ধারণ করে রুমা।
সেই ভিডিও এসেছে সাংবাদিকদের হাতে। সেখানে দেখা যায়, হাত-পা বাঁধা শিউলিকে পুকুরে ফেলা হচ্ছে। পুকুর থেকে উঠতে চাইলে ঘাটে দাঁড়িয়ে থাকা স্বামী লাঠি দিয়ে তাকে পেটাচ্ছে। উল্লাস করতেও দেখা যায় স্বামীরূপী ওই পাষন্ডকে।
ওই ঘটনার পর শিউলিকে রাতে তার বাবার বাড়ির সামনে রেখে পালানোর চেষ্টা করে স্বামী রফিক। পরে স্থানীয় লোকজন তাকে আটক করে। শনিবার দিনভর স্থানীয়ভাবে মীমাংসার চেষ্টা চলে। খবর পেয়ে মধ্যরাতে ঈশ্বরগঞ্জ থানা পুলিশ রফিককে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। আর শিউলিকে ভর্তি করা হয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।
নির্যাতনের শিকার শিউলি জানান, যৌতুকের জন্য শাশুড়ি, জা, স্বামী সবাই মিলে হাত-পা বেঁধে তাকে মারধর করে। শরীরে ঢেলেছে মরিচের গুঁড়ো। মরিচ মেশানে পানি খাইয়েছে। হাত-পা বাঁধা অবস্থায় পুকুরে ফেলা হয়, পেটানোও হয়। একটু পানি চাইলেও দেয়া হয়নি। প্রাণভিক্ষা চাইলেও রেহাই মেলেনি। কেউ তাকে রক্ষায় এগিয়ে যায়নি। যারা তার ওপর নির্যাতন চালিয়েছে তাদের বিচার হোক।
তবে পুলিশ হেফাজতে থাকা রফিক মিয়ার দাবি, তার মায়ের হাতে কামড়ে দেন শিউলি। সেই রাগে বাঁশ দিয়ে স্ত্রীকে মেরেছেন। হাত-পা বেঁধে পানিতে ফেলা হয়নি। বাড়ি থেকে চলে যেতে চাইলে হাত-পা বেঁধে রাখা হয়েছিল। ঘর থেকে শিউলি লাফাতে লাফাতে পুকুরে যায়। মরিচও দেয়া হয়নি।
ঈশ্বরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাছিনুর রহমান জানান, শিউলি স্বামী ও জা’কে আসামি করে মামলা করেছেন। সেই মামলায় স্বামী রফিককে রোববার বিকেলে